অ্যান্টার্কটিকা মানেই রহস্যেঠাসা এক মহাদেশ। যেখানে বাস করে কোটি কোটি পেঙ্গুইন, আর নানা বরুফে প্রাণী। এই মহাদেশে মানুষের আবাস একেবারেই হাতে গোনা। অভিযাত্রী আর বিজ্ঞানীরা কালেভদ্রে এই বরফ-ঢাকা মহাদেশে আসা-যাওয়া করে। প্রবল বাতাস, হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা আর আকস্মিক ঝড়; সবমিলিয়ে এই মহাদেশে বসবাস করা মানেই জীবন বিপন্ন করা। আর সেকারণেই টানা দীর্ঘ সময় থেকে গবেষণা চালানো যায় না অ্যান্টার্কটিকায়। ফলে অনেক রহস্যের সমাধানও করা যাচ্ছে না সহজে।
এবার দুর্ভেদ্য সেই পথ কিছুটা সহজ করতে অ্যান্টার্কটিকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব জানার জন্য সেখানে ড্রোন পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাজ্যের গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে’।
সার্ভের জন্য ড্রোনটি তৈরি করেছে যুক্তরাজ্যের ড্রোন নির্মাতা কোম্পানি ‘উইন্ড্রাসার’। বিজ্ঞানীদের দাবি করছেন, বরফের আবরণের নিচে থাকা বিভিন্ন পর্বতের তথ্য সংগ্রহ করবে ড্রোনটি। জানাবে বিভিন্ন পর্বতের বরফ গলে যাওয়ার তথ্যও। ফলে অ্যান্টার্কটিকা সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার সুযোগ মিলবে। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের চারপাশে চরম আবহাওয়ায় ড্রোনটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়েছে।
ড্রোনটির কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রকৌশলী রেবেকা টুমি বলেন, প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ১০০ কেজি পণ্য বহন করতে পারে ড্রোনটি। রাডার, ক্যামেরাসহ বিভিন্ন যন্ত্র ড্রোনটির পেছনে, ডানায় বহন করা যায়। অ্যান্টার্কটিকার রোথেরা ঘাঁটি থেকে ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। প্রচলিত বিমানের তুলনায় ড্রোনটি অনেক কম জ্বালানি ব্যবহার করে। আর ড্রোনটির সংগ্রহ করা তথ্য কেমব্রিজে ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের সদর দপ্তরে বিশ্লেষণ করা হবে।
ড্রোনটির সংগ্রহ করা তথ্য ঘেঁটে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের একটি মডেলও তৈরি করতে চান বিজ্ঞানীরা। যাতে জানা যাবে, বরফের নিচে ভূমির জটিল অবস্থান। অ্যান্টার্কটিকার বিশাল এলাকা এখনো মানচিত্রের আওতায় আসেনি। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই অ্যান্টার্কটিকা পাঠানো হবে ড্রোনটি।