জাভির ইতিহাসের পর তোরেসের হ্যাটট্রিক

‘এর চেয়ে ভালো কিছু আমি চাইতে পারতাম না’—ম্যাচ শেষে বলা কথাটা ফেরান তোরেস। কাল রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল বার্সেলোনায় তোরেসের ১০০তম। আর এই ম্যাচেই ক্লাবের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছেন ২৯ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।

শুধু হ্যাটট্রিকই নয়, অন্য একটি গোলে করেছেন সহায়তাও। তোরেসের চার গোলে অবদানের ম্যাচে বার্সেলোনা বেতিসকে হারিয়েছে ৪-২ ব্যবধানে।

বেনিতো ভিয়ামারিনের ম্যাচটিতে অবশ্য শুরুতেই একটা ইতিহাস গড়েছেন বার্সেলোনা কোচ জাভি হার্নান্দেজ। শুরুর একাদশেই নামিয়ে দেন লামিনে ইয়ামাল ও পাউ কিউবারসিকে। এদিন ইয়ামালের বয়স ছিল ১৬ বছর ১৯২ দিন, কিউবারসির ১৬ বছর ৩৬৪ দিন। একবিংশ শতাব্দীতে লা লিগায় জাভিই প্রথম কোচ, যিনি ১৭ বছরের কম বয়সী দুজন খেলোয়াড়কে শুরুর একাদশে নামিয়েছেন।

জাভির ইতিহাসের পর তোরেসের হ্যাটট্রিক
লামিনে ইয়ামালক

জোয়াও কানসেলো, আন্দ্রেস ক্রিস্টেনসেন, ইনিও মার্তিনেজ আর মার্কো আলনসোদের চোটজনিত অনুপস্থিতিই জাভিকে শুরুর একাদশে দুই তরুণ নামিয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। যদিও সেন্টার ব্যাকে কিউবারসির জায়গায় সের্হি রবার্তোকেও খেলাতে পারতেন তিনি। ‘বার্সা বি’ দল থেকে উঠিয়ে আনা কিউবারসি সম্পর্কে ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন জাভি, ‘সে খুব ভালোভাবেই প্রস্তুত। লামিনে ইয়ামালের মতো সেও বার্সেলোনায় একটি যুগের চিহ্ন রাখতে যাচ্ছে। আমরা তরুণদের নিয়ে দল গড়ছি। এরাই ক্লাবের ভবিষ্যৎ।’
বেতিসের বিপক্ষে ম্যাচে বার্সেলোনার চতুর্থ গোলটি এসেছে ‘ভবিষ্যৎ’ হিসেবে বিবেচিত হওয়া ইয়ামালের সৌজন্যেই। তোরেস ২১ ও ৪৮ মিনিটে গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দিলেও বেতিসের হয়ে চার মিনিটের ব্যবধানে দুটিই শোধ দিয়ে দেন ইসকো। ২-২ স্কোরলাইনে ম্যাচ ৯০ মিনিট পার হওয়ার পর যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে তৃতীয় গোল পায় বার্সা।

জাভির ইতিহাসের পর তোরেসের হ্যাটট্রিক
শততম ম্যাচে হ্যাটট্রিক ফেরান তোরেসের

তোরেস-জোয়াও ফেলিক্সের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়ার শেষ পর্যন্ত নিচু শটে বল জালে জড়ান ফেলিক্স। এর দুই মিনিট পরই গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেন ইয়ামাল। তবে ১৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের শট ক্রসবারে লেগে ফিরে এলেও ফিরতি শটে বল জালে পাঠান তোরেস। ২০২১ সালে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে আসা এই ফরোয়ার্ডের এটি বার্সার হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক। প্রথম দুই মৌসুমে ৭টি করে ১৪ গোল করা তোরেস চলতি মৌসুমে ২৯ ম্যাচেই করলেন ১১ গোল।

ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়ায় নিজের পরিশ্রমের প্রসঙ্গটিই তুলে এনেছেন তোরেস, ‘এটা আমার পরিশ্রম, শৃঙ্খলা, ধৈর্য, নিজের প্রতি বিশ্বাস আর সুযোগের সদ্ব্যবহারেরই ফল। বার্সেলোনা বিশ্বের অন্যতম বড় ক্লাব। এখানে চাওয়া থাকে অনেক বেশি। চারপাশ থেকে প্রচুর সমালোচনা হয়, গণমাধ্যমের চোখ থাকে, এসবের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। হ্যাটট্রিকটা আমি উপভোগ করব। আর আজই আমি বার্সার হয়ে ১০০ নম্বর ম্যাচটা খেললাম। এর চেয়ে বেশি কিছু আমি চাইতে পারতাম না।’

লা লিগায় ২০ ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনার অবস্থান তৃতীয়। সমান ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রিয়াল মাদ্রিদ। আর কাল রাতেই সেভিয়াকে ৫-১ গোলে হারিয়ে ২১ ম্যাচে ৫২ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে জিরোনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *