হিযবুত তাহ্‌রীর ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ হচ্ছে

যুক্তরাজ্যে হিযবুত তাহ্‌রীরকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য দেশটির পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব তোলা হয়েছে। সেটি পাস হলে যুক্তরাজ্যে ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের’ তকমা পাবে হিযবুত তাহ্‌রীর।

ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হিযবুত তাহ্‌রীর ‘ইহুদিবিরোধী’ একটি সংগঠন। তাই একে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করা প্রয়োজন।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর গতকাল সোমবার জানায়, চলতি সপ্তাহে পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি নিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। প্রস্তাবের পক্ষে আইনপ্রণেতারা সায় দিলে যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাস আইনের আওতায় হিযবুত তাহ্‌রীরের সদস্য হওয়া বেআইনি হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, হিযবুত তাহ্‌রীর ইহুদিবিরোধী একটি সংগঠন। এ সংগঠন সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখে। এমনকি গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের হামলার প্রশংসা করেছে, উদ্‌যাপন করেছেন হিযবুত তাহ্‌রীরের সদস্যরা।

ইসরায়েলের গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর হামাসের সদস্যদের ‘নায়ক’ বলে উদ্‌যাপন করেছিল হিযবুত তাহ্‌রীর। নিজেদের ওয়েবসাইটে এ নিয়ে বিবৃতি দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে উসকে দিয়েছে সংগঠনটি, এমনটাই জানান জেমস ক্লেভারলি।

এর আগে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও ডেভিড ক্যামেরনের আমলে হিযবুত তাহ্‌রীরকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের সেসব উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি।
হিযবুত তাহ্‌রীরের যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৩ সালে। সংগঠনটির সদর দপ্তর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননে। বিশ্বের ৩২টি দেশে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে হিযবুত তাহ্‌রীর। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া রয়েছে। ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা এ সংগঠনের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য।

ইতিমধ্যে কয়েকটি দেশ হিযবুত তাহ্‌রীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ, মিসর ও জার্মানি রয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইনপ্রণেতারা সায় দিলে আগামী শুক্রবার থেকে যুক্তরাজ্যে ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়েদার মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা হিযবুত তাহ্‌রীর।
ফলে হিযবুত তাহ্‌রীরকে সমর্থন করা যুক্তরাজ্যে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ অপরাধে অভিযুক্ত হলে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। এ ছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিধান রয়েছে।

এদিকে গত মাসে নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বার্তায় হিযবুত তাহ্‌রীর বলেছিল, যুক্তরাজ্যে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ ‘হতাশার লক্ষণ’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *