ইনিংসের তৃতীয় বলেই লিটন দাসকে হারানোর পরও দারুণ শুরু। এরপর শ্রীলঙ্কার বোলারদের, বিশেষ করে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার দাপটের পরও শেষ দিকে তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটে আবার বাংলাদেশের ম্যাচ ফেরা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসে ছিল এমন উত্থান-পতন। উত্থান-পতনের ইনিংসে হৃদয়ের ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ৯৬ রানে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত তুলতে পেরেছে ২৮৬ রান। দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দেওয়ার পরও হৃদয়ের আক্ষেপ থাকতে পারে। ইনিংসের শেষ দুই বলে দুই ছক্কাও হৃদয়কে যে তিন অঙ্কের ঘরে নিয়ে যেতে পারেনি।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে এদিনও শূন্য রানে আউট হন লিটন। ৯০ ম্যাচের ক্যারিয়ারে যেটি লিটনের ১৪তম ‘ডাক’। বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ শূন্যে মোহাম্মদ আশরাফুলকে ছাড়িয়ে গেছেন লিটন। ওপরে এখন তামিম ইকবাল (১৯), হাবিবুল বাশার (১৮) এবং মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মোহাম্মদ রফিক (দুজনই ১৫)। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বশেষ ৫ ম্যাচে এটি লিটনের তৃতীয় ডাক। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার টানা দুই ম্যাচে ০ রানে ফিরলেন লিটন। গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরপর দুবার শূন্যের তেতো স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি।
লিটনের বিদায়ের পর ভাগ্যের সহায়তায় এগিয়ে চলছিলেন নাজমুল, সঙ্গে ছিলেন সৌম্য। দুজনে গড়েন ৭২ বলে ৭৫ রানের জুটি। সেই জুটি ভাঙে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল ৩৯ বলে ৪০ রান করে আউট হলে। অফ স্টাম্প ঘেঁষা বলে লেগ সাইডে ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। নাজমুলের আউটের পরে সৌম্যর ব্যাটে ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারের ১২তম ফিফটি পেয়েছেন সৌম্য। খেলেছেন ৬৬ বলে ৬৮ রানের ইনিংস। এই ইনিংস খেলার পথে ১০ম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২ হাজার রান হয়েছে সৌম্যর। এই বাঁহাতি আউটও হয়েছেন দুর্ভাগ্যজনকভাবে। রিভার্স সুইপ করেছিলেন। টাইমিং হয়েছিল বেশ ভালো। কিন্তু মিডউইকেট থেকে বাঁয়ে ছুটে এসে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন দিলশান মাদুশঙ্কা।
এরপর মাহমুদউল্লাহ আগ্রাসী ক্রিকেটের ধাঁচটা বজায় রাখতে চেয়েছিলেন। তবে আজ সফল হননি। নিজের ইনিংসের দ্বিতীয় বলে হাসারাঙ্গাকে সামনে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর অভিজ্ঞ মুশফিক হৃদয়ের সঙ্গে জুটি গড়েন। খেলেন ২৮ বলে ২৫ রানের ইনিংস। তবে ভালো খেলতে খেলতে হাসারাঙ্গার ফুল লেংথের বল সুইপ করতে গিয়ে আউট হন তিনি।
মেহেদী হাসার মিরাজ উইকেট বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। সেই হাসারাঙ্গার বলেই সামনে এসে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন মিরাজ। ১৮৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরের গল্পটা শুধুই হৃদয়ের। শুরুতে অনেকটা খোলসে আবদ্ধ হয়ে থাকলেও শেষ দিকে খেলেছেন নিজের স্বভাবসুলভ খেলা। মাত্র দুই চারে তিনি ফিফটি করেছেন ৭৪ বলে। পরের ৪৬ রান করেছেন ২৮ বলে। মেরেছেন ৫টি ছয় ও ১টি চার।
কখনো তিনি তানজিম হাসানের সঙ্গে জুটি গড়েছেন, কখনো জুটি গড়েছেন তাসকিনকে সঙ্গে নিয়ে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি হৃদয়ের সপ্তম ফিফটি। সর্বশেষ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফিফটি পেয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হৃদয়ের সর্বশেষ ফিফটি ছিল সেটিই। ৮ ইনিংস পর আরেকটি ৫০ রানের ইনিংসের দেখা পেলেন তিনি।