৯৮ টাকার পেঁয়াজ ৫০ টাকায়, ৩৫ টাকার আলু ২০ টাকায়

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই দাম বেড়ে গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের। খাদ্যসামগ্রী কিনতেও সমস্যায় পড়েছেন নিম্নমধ্য ও নিম্নআয়ের মানুষ। এবার তাদের কথা চিন্তা করে সুনামগঞ্জের ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়েছে সামাজিক সংগঠন ‘মনুষ্যত্ব ফাউন্ডেশন’। বাজারে দামের চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রির জন্য পণ্যের পসরা নিয়ে তারা সাজিয়েছে ন্যায্যমূল্যের দোকান। বাজার থেকে বেশি দামে সংগ্রহ করা পণ্য ভর্তুকি দিয়ে সেখানে বিক্রি করা হচ্ছে কোনোপ্রকার মুনাফা ছাড়া। পুরো বিষয়টিই একটি সেবামূলক উদ্যোগ।

সুনামগঞ্জ শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে একটি ভবনের তৃতীয় তলায় এই দোকান স্থাপন করা হয়েছে। খবর পেয়ে প্রথমদিনেই সেখানে ভিড় জমিয়েছেন বহু ক্রেতা। এই দোকানের পণ্যের দাম অন্যান্য জায়গার চাইতে কম হওয়ায় তাদের স্বস্তির নিশ্বাস নিতে দেখা গেছে।

মনুষ্যত্ব ফাউন্ডেশন এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আল মাহমুদ রাহী জানান, প্রথমদিনই মানুষের ভিড় সামলাতে আমাদের সবার হিমশিম খেতে হয়েছে। হঠাৎ করে একটি দোকান চালুর উদ্যোগ নিয়ে আমরা সন্দিহান ছিলাম, মানুষ আদৌ সাড়া দেবেন কিনা। কিন্তু এখন আমরা মধ্যরাত পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে বাধ্য হয়েছি। আশা করি আমাদের এই উদ্যোগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্য ব্যবসায়ীরাও ন্যায্যদামে দ্রব্যসামগ্রী বিক্রির ব্যাপারে উৎসাহ পাবেন। লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। মানুষের যেন কষ্ট না হয়, সেজন্যই আমাদের এই ছোট প্রচেষ্টা।

দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা, রাতে তারাবির নামাজের পর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে।

মনুষ্যত্ব ফাউন্ডেশনের ন্যায্যমূল্যের দোকানের মূল্যতালিকায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি যে খাদ্যসামগ্রীগুলো মানুষের প্রয়োজন হয়, সেগুলোর দাম রাখা হচ্ছে একেবারেই কম। যেমন, বাজারে যে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৯৮ টাকা, সেটি তারা বিক্রি করছেন ৫০ টাকায়। একইভাবে কেজিপ্রতি ৩৫ টাকার আলু বিক্রি করছেন ২০ টাকায়। ৬০ টাকা দামের চাল পাওয়া যাচ্ছে ৪৯ টাকায়। ডাল, চিনি, আদা-রসুনসহ অন্যান্য জিনিসের দামও বাজারের চেয়ে অনেক কম। আর বেশি দামের কিছু পণ্যের মূল্য খুব বেশি কমানো সম্ভব না হলেও তারা সেগুলো মুনাফা ছাড়া বিক্রি করছেন। যেমন ১৫০ টাকা মূল্যের ১ লিটার সয়াবিন তেলে ১০ টাকা কম রাখা হচ্ছে।

এর আগেও বিভিন্নসময়ে সুনামগঞ্জের সুবিধাবঞ্চিত ও দুর্যোগকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মনুষ্যত্ব ফাউন্ডেশন। করোনাকালীন সময়েও মৃতদের দাফন বা সৎকারেও তারা সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া বন্যার সময়ে বন্যার্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি রান্না করা খাবার নিয়ে গেছেন। সংগঠনটির সদস্যদের নিজেদের অর্থেই পরিচালিত হয় এর বেশিরভাগ কার্যক্রম। কখনো কখনো প্রবাসীরাও সহায়তা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *