ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী কে যৌন হয়রানির অভিযোগে অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি।
নাদির জুনায়েদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক নাদির জুনায়েদকে সব প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া নাদির জুনায়েদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি বিরোধী সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রিভেনশন অব সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট সেলকে দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, অধ্যাপক নাদির জুনায়েদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি আজ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কমিটির তদন্তে নাদির জুনায়েদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আরও তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলকে। এই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক নাদির জুনায়েদকে সমস্ত একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সোমবার সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক নাদির জুনায়েদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনদিনের আলটিমেটাম দেন ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন অধ্যাপক নাদির জুনায়েদকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
অধ্যাপক নাদির জুনাইদ কে সকল প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।
উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনায়েদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন একই বিভাগের এক ছাত্রী। ওই শিক্ষার্থী প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়ে মানববন্ধন করে।
পরে ১২ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনায়েদের অফিস ও ক্লাসরুমে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিলে প্রশাসন অধ্যাপক নাদির জুনায়েদকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি দেয়। এছাড়া একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডাক্তার মুনিয়া নাগরিক টিভিকে হুমকি দিলেন
এদিকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) সাবেক এক ছাত্রী অধ্যাপক নাদির জুনায়েদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে তিনি ঢাবি প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।