দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী, ভোটার, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ প্রত্যেককে নিরাপত্তা দিতে নির্বাচনী ছক তৈরি করেছে পুলিশ। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সারা দেশে ১ লাখ ৭৪ হাজার পুলিশ মাঠে থাকবেন।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশ ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও আনসার সদস্যরা মাঠে থাকবেন। সারা দেশে ১ লাখ ৭৪ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সদস্যরা নিজ বাহিনীর পাশাপাশি অন্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন। শুক্রবার স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি, র্যাব, এপিবিএন ও কোস্টগার্ড নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে মাঠে নেমেছে।
সূত্র জানায়, পুলিশ মোট পাঁচ দিন ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনের তিন দিন আগে তারা মাঠে নামবে এবং নির্বাচনের দুই দিন পর পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবে। সারা দেশে পুলিশ বাহিনীতে সদস্য আছে ২ লাখ ১২ হাজার।
পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-অপারেশন্স) মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সারা দেশে ১ লাখ ৭৪ হাজার পুলিশ নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবে। এর মধ্যে ৮০ হাজার পুলিশ মাঠে থেকে নির্বাচনকালীন কার্যক্রম শুরু করেছে। বাকি ৯৪ হাজার পুলিশ সদস্য নির্বাচনের তিন দিন আগে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে মাঠে নামবে। ঢাকা মহানগরে অন্তত ২৪ হাজার পুলিশ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে। তিনি বলেন, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়, কেন্দ্রে ব্যালট ও ব্যালট বাক্স আনা-নেওয়া, নির্বাচনী কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন।
ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্বাচনে শুধু ভোটকেন্দ্রে টানা দায়িত্ব পালন করতে হয় পুলিশ সদস্যদের। তবে যাঁরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং যাঁরা টহলে থাকবেন, তাঁরা পালা করে দায়িত্ব পালন করবেন। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে কোস্টগার্ড জাহাজ বা স্পিডবোটে টহল দেবে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, তাই অতি প্রয়োজন এবং একান্তই পারিবারিক কোনো সমস্যা না থাকলে কাউকে ছুটি দেওয়া হচ্ছে না।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, দেশের ৬৪ জেলায় ৩০০ আসনে ৪২ হাজার ২৪৯ কেন্দ্র আছে। এর মধ্যে ১০ হাজার ৩০০ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।
জেলায় একটি ভোটকেন্দ্রে দুজন পুলিশ সদস্য, ১২ জন আনসার সদস্যসহ ১৪-১৫ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ সদস্যসহ ১৬-১৭ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। তবে ঢাকা মহানগরসহ দেশের আটটি মহানগরের প্রতিটি কেন্দ্রে তিনজন পুলিশ, ১২ জন আনসার সদস্যসহ ১৫ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিটি কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ, ১২ জন আনসার সদস্যসহ ১৬ জন মোতায়েন করা হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনের আগে ও পরে ঢাকা মহানগরীতে ২৪ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর একাংশ ইতিমধ্যে নির্বাচনী কার্যক্রমে মাঠে নেমেছে।