ইয়েমেনে আক্রমণ করে হুতিকেই জায়গা করে দিল যুক্তরাষ্ট্র

হুতি বিদ্রোহীরা চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের মতো শক্তি তাদের আক্রমণ করুক। এই বার্তাটাই তারা দেশের জনগণকে দিতে চেয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ মনে করছে, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে যেভাবে ইয়েমেনে আক্রমণ চালিয়েছে, তাতে লাভ হচ্ছে হুতিদেরই। ইরান সমর্থিত এই বিদ্রোহীরা দেশের মানুষকে অনেক দিন ধরেই বোঝানোর চেষ্টা করছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলের মতো শক্তিগুলোর সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি আক্রমণ তাতেই সিলমোহর লাগিয়ে দিল।

ওয়াশিংটন ইনফরমেশন রিসার্চ সেন্টার ফর ইয়েমেনের সাবেক ডিরেক্টর হিশাম-আল-ওমেইসি ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘গত আট বছর ধরে হুতি বিদ্রোহীরা তাদের বন্ধুদের বলার চেষ্টা করছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লড়াই করছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এই আক্রমণ তাদের এই দাবিকে জিতিয়ে দিল।’

২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলছে।
সৌদি আরবের মদদপুষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে হুতি বিদ্রোহীরা। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর দেশের উত্তর এবং পশ্চিম প্রান্ত এখন হুতিদের দখলে। অর্থাৎ ইয়েমেন থেকে লোহিত সাগরে ঢোকার যে রাস্তা, তা এখন হুতিদের হাতে। অন্যদিকে দক্ষিণ ইয়েমেন সরকারের হাতে।

আন্তর্জাতিকভাবে এই সরকারই ইয়েমেনে স্বীকৃত। দেশের পূর্বভাগ সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে।
এদিকে দীর্ঘ যুদ্ধে জর্জরিত ইয়েমেন, অর্থনীতি ভেঙে পড়ে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধবিরতিতে ঢুকেছে হুতি বিদ্রোহীরা। হুতিদের দাবি, তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
ইরান ছাড়া আর কোনো দেশই তাদের স্বীকৃতি দেয় না। দেশের জনগণকে তারা বোঝাচ্ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ নিয়ে তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বস্তুত সে কারণেই তারা লোহিত সাগরে একের পর এক আক্রমণ চালাচ্ছিল বিভিন্ন দেশের পণ্যবাহী জাহাজে।

নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার সুযোগ খুঁজছিল তারা। যেহেতু লোহিত সাগরের রাস্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ, তাই এই রাস্তায়ই আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। যুক্তরাষ্ট্র কোনো কৌশলে না গিয়ে সরাসরি তাদের আক্রমণ করে হুতিদের চেষ্টাটাই আসলে সফল করে দিল। বস্তুত হুতি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের মানুষও এমনটাই মনে করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *